ঘূর্ণিঝড়ে প্রদত্ত সংকেতসমূহের কোনটির কী অর্থ বোঝায়?
-বাংলাদেশ বিশ্বের ঘূর্ণিঝড় প্রবল এলাকা সমূহের অন্তর্গত।প্রায় প্রতি বছরেই কম বেশি
ঘূর্ণিঝড় সিডর,আইলা এবং বর্তমানে আমফান এর প্রাদুর্ভাব চলছে।এ সময়ে আবহাওয়া কর্মকর্তাদের কতৃক প্রদত্ত অনেক সতর্ক সংকেত থাকে,যার সবকটির অর্থ আমাদের সকলের ই জানা উচিত।আবহাওয়া অধিদপ্তর ঝড়ের সময়ে সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১ টি এবং নদীবন্দরের জন্য ৪ টি সংকেত নির্ধারিত করা আছে।এই সংকেতগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা -
=সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রদত্ত ১১ টি সংকেতঃঃ
(১)দূরবর্তী সতর্কসংকেতঃ কোনো জাহাজ বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে।দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে।এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬১ কিঃমিঃ।ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
(২)দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতঃ এর অর্থ বুঝায় গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে।বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ।তাই বন্দর এখনি ঝড়ে কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই কিন্তু বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ বিপদে পড়তে পারে।
(৩)স্থানীয় সতর্ক সংকেতঃঃ এ সংকেত দ্বারা বন্দর ও বন্দরের মধ্যে নোঙর করা জাহাজগুলো দুর্যোগ কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এক্ষেত্রে বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৪০-৫০ কিঃমিঃ হতে পারে।
(৪)স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতঃ ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দ্বারা বোঝায় বন্দর ঘূর্ণিঝড়ে কবলিত।এক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৫১-৬১ কিঃমিঃ।তবে এক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় হয় নি।
(৫)বিপদ সংকেতঃ এ সংকেত বন্দর ছোট কিংবা মাঝারি মারাত্নক এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলের সম্মুখীন হওয়াকে বুঝাবে।এক্ষেত্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ।ঝড়টি বন্দরসমূহকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
(৬) বিপদ সংকেতঃ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতে বলা আছে যে,বন্দর ছোট কিংবা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে এবং বাতাসের একটানা গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের ন্যায়।কিন্তু ঝড়টি বন্দরের ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(৭)বিপদ সংকেতঃঃ এ সংকেতে ৫ ও ৬ নম্বর সংকেতের মতোই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকবে।তবে ঝড়টি বন্দরের ওপর কিংবা তার কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
(৮)মহাবিপদ সংকেতঃ এ পর্যায়ে বন্দরটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ার সম্ভাবনায় রয়েছে।বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিঃমিঃ এর বেশি ও হতে পারে।বন্দরের বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(৯)মহাবিপদ সংকেতঃ ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দ্বারা বন্দরকে প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিজ ঝড়ের সম্মুখীন হওয়া বুঝাবে এবং বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৮৯ কিঃমিঃ এর কম বেশি হতে পারে।ঝড়টি বন্দরকে ডান দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(১০)মহাবিপদ সংকেতঃ ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের ক্ষেত্রে ও ৮ ও ৯ নম্বর সংকেত প্রযোজ্য।তবে এক্ষেত্রে ঝড়টি বন্দরের ডান বা বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে এ সংকেত প্রযোজ্য নয়।
(১১)যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেতঃ সর্বেশেষ সংকেতটি আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
=নদীবন্দরের জন্য ৪ টি সংকেতঃঃ
নদীবন্দরের জন্য প্রদত্ত ৪ টি সংকেত নিম্নরূপ-
(১)নৌ সতর্কতা সংকেতঃ নদীবন্দরের জন্য ১ নম্বর সতর্ক সংকেতটি বুঝায়,বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝোড়ো আবহাওয়ার কবলের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে ঘন্টায় প্রায় ৬০ কিঃমিঃ গতিবেগের বাতাস প্রবাহিত হবে যা কালবৈশাখীর জন্য ও একই সংকেত প্রদর্শিত হয়।
(২)নৌ হুঁশিয়ারি সংকেতঃঃ বন্দর এলাকায় নিম্নচাপের সমান তীব্রতার একটি ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে,যার গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬১ কিঃমিঃ বা একটি কালবৈশাখী (যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিঃমিঃ বা তার বেশি)।৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট নৌযানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
(৩)নৌ বিপদ সংকেতঃ এ সংকেতটি বন্দরকে ঝড়ো কবলিত হওয়াকে বুঝাবে।এক্ষেত্রে ঘন্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কিঃমিঃ পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় বন্দর এলাকায় অতসত্ত্বর আঘাত হানতে পারে।সকল প্রকারের নৌযানকে অনতিবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে
(৪)নৌ মহাবিপদ সংকেতঃ সর্বশেষ পর্যায়ের সংকেত দ্বারা বুঝাবে বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হবে এবং শিগগিরই বন্দর এলাকায় আঘাত হানবে।ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিঃমিঃ বা তার বেশি হবে।সকল প্রকারের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
আল্লাহ পাক আমাদের সকল মানবজাতিকে সকল প্রকার বিপদ থেকে হেফাজত করুন(আল্লাহুম্মা আমিন)।
ঘূর্ণিঝড় সিডর,আইলা এবং বর্তমানে আমফান এর প্রাদুর্ভাব চলছে।এ সময়ে আবহাওয়া কর্মকর্তাদের কতৃক প্রদত্ত অনেক সতর্ক সংকেত থাকে,যার সবকটির অর্থ আমাদের সকলের ই জানা উচিত।আবহাওয়া অধিদপ্তর ঝড়ের সময়ে সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১ টি এবং নদীবন্দরের জন্য ৪ টি সংকেত নির্ধারিত করা আছে।এই সংকেতগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা -
=সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রদত্ত ১১ টি সংকেতঃঃ
(১)দূরবর্তী সতর্কসংকেতঃ কোনো জাহাজ বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে।দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে।এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬১ কিঃমিঃ।ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
(২)দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতঃ এর অর্থ বুঝায় গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে।বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ।তাই বন্দর এখনি ঝড়ে কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই কিন্তু বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ বিপদে পড়তে পারে।
(৩)স্থানীয় সতর্ক সংকেতঃঃ এ সংকেত দ্বারা বন্দর ও বন্দরের মধ্যে নোঙর করা জাহাজগুলো দুর্যোগ কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এক্ষেত্রে বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৪০-৫০ কিঃমিঃ হতে পারে।
(৪)স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতঃ ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দ্বারা বোঝায় বন্দর ঘূর্ণিঝড়ে কবলিত।এক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৫১-৬১ কিঃমিঃ।তবে এক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় হয় নি।
(৫)বিপদ সংকেতঃ এ সংকেত বন্দর ছোট কিংবা মাঝারি মারাত্নক এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলের সম্মুখীন হওয়াকে বুঝাবে।এক্ষেত্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ।ঝড়টি বন্দরসমূহকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
(৬) বিপদ সংকেতঃ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতে বলা আছে যে,বন্দর ছোট কিংবা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে এবং বাতাসের একটানা গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের ন্যায়।কিন্তু ঝড়টি বন্দরের ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(৭)বিপদ সংকেতঃঃ এ সংকেতে ৫ ও ৬ নম্বর সংকেতের মতোই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকবে।তবে ঝড়টি বন্দরের ওপর কিংবা তার কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
(৮)মহাবিপদ সংকেতঃ এ পর্যায়ে বন্দরটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ার সম্ভাবনায় রয়েছে।বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিঃমিঃ এর বেশি ও হতে পারে।বন্দরের বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(৯)মহাবিপদ সংকেতঃ ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দ্বারা বন্দরকে প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিজ ঝড়ের সম্মুখীন হওয়া বুঝাবে এবং বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৮৯ কিঃমিঃ এর কম বেশি হতে পারে।ঝড়টি বন্দরকে ডান দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
(১০)মহাবিপদ সংকেতঃ ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের ক্ষেত্রে ও ৮ ও ৯ নম্বর সংকেত প্রযোজ্য।তবে এক্ষেত্রে ঝড়টি বন্দরের ডান বা বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে এ সংকেত প্রযোজ্য নয়।
(১১)যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেতঃ সর্বেশেষ সংকেতটি আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
=নদীবন্দরের জন্য ৪ টি সংকেতঃঃ
নদীবন্দরের জন্য প্রদত্ত ৪ টি সংকেত নিম্নরূপ-
(১)নৌ সতর্কতা সংকেতঃ নদীবন্দরের জন্য ১ নম্বর সতর্ক সংকেতটি বুঝায়,বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝোড়ো আবহাওয়ার কবলের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে ঘন্টায় প্রায় ৬০ কিঃমিঃ গতিবেগের বাতাস প্রবাহিত হবে যা কালবৈশাখীর জন্য ও একই সংকেত প্রদর্শিত হয়।
(২)নৌ হুঁশিয়ারি সংকেতঃঃ বন্দর এলাকায় নিম্নচাপের সমান তীব্রতার একটি ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে,যার গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৬১ কিঃমিঃ বা একটি কালবৈশাখী (যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিঃমিঃ বা তার বেশি)।৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট নৌযানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
(৩)নৌ বিপদ সংকেতঃ এ সংকেতটি বন্দরকে ঝড়ো কবলিত হওয়াকে বুঝাবে।এক্ষেত্রে ঘন্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কিঃমিঃ পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় বন্দর এলাকায় অতসত্ত্বর আঘাত হানতে পারে।সকল প্রকারের নৌযানকে অনতিবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে
(৪)নৌ মহাবিপদ সংকেতঃ সর্বশেষ পর্যায়ের সংকেত দ্বারা বুঝাবে বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হবে এবং শিগগিরই বন্দর এলাকায় আঘাত হানবে।ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিঃমিঃ বা তার বেশি হবে।সকল প্রকারের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
আল্লাহ পাক আমাদের সকল মানবজাতিকে সকল প্রকার বিপদ থেকে হেফাজত করুন(আল্লাহুম্মা আমিন)।
No comments